সাদাকালো অ্যানিমেশন ফ্যাঙ্কেনউইনি
Frankenweenie (2012)
Directed By: Tim Burton
IMDb Rating- 7/10

বোল্টের পর পোষা কুকুরকে নিয়ে করা এই ছবিটি দেখে
দারুণ মজা পেলাম।
ছবির কাহিনী এগুতে থাকে স্কুলে পড়া এক ছেলে
ভিক্টরকে নিয়ে। সে তার পোষা কুকুর স্পার্কিকে ফিরিয়ে আনতে একটি এক্সপিরিমেন্ট
চালায়, সে সফল হলেও এ নিয়ে ঘটতে থাকে নানা দুর্ঘটনা। Edward
Scissorhands খ্যাত প্রযোজক টিম বার্টনের এনিমেশন মুভি এটি। ভালোই লেগেছে অ্যানিমেশন টি দেখে। সাদা
কালো দেখে কিছুটা ভ্রুকুটি করলেও পরে মজাই লাগে।
ভিক্টর ফ্রাঙ্কেনস্টাইন নিজের বয়সী বাচ্চাদের
থেকে একটু আলাদা, বিজ্ঞান আর চলচ্চিত্র নির্মাণ তার খুবই পছন্দের বিষয়, বন্ধুবান্ধব
তার নেই বললেই চলে। একারণে ভিক্টরের বাবা ছেলেকে নিয়ে যান বেসবল খেলতে। বল কুড়িয়ে আনতে গিয়ে মারা যায় ভিক্টরের কুকুর স্পার্কি। স্কুলের নতুন বিজ্ঞান শিক্ষক মিস্টার রজকোভস্কির ‘ইফেক্ট
অব ইলেকট্রিসিটি অন ফ্রগ’ এর আলোচনা শুনে উজ্জীবিত হয় ভিক্টর। নিয়ে
আসে স্পার্কির মৃতদেহ। আর তাকে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়। ভিক্টর
তাকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও একসময় সবাই স্পার্কির অস্তিত্ব টের পায়। এ সুযোগ কাজে লাগায় ভিক্টরের ক্লাসমেট এডগার। এডগারের ব্ল্যাক মেইলিংয়ের কারণে একটি মৃত গোল্ডফিশকে ফিরিয়ে
আনার চেষ্টা করে ভিক্টর। তবে স্পার্কির মতো তাকে ফিরিয়ে
আনতে পারে না। মাছ থেকে যায় অদৃশ্য। এডগারের দেখাদেখি অন্যরাও
মারাত্মক সব প্রজেক্ট বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে বব ও তোশিয়াকি। অভিভাবকদের চাপের মুখে স্কুল ছাড়তে হয় রজকোভস্কিকে।
একসময় এডগারই ফাঁস করে দেয় স্পার্কির কথা। এদিকে স্পার্কিকে ভূত ভেবে ভয় পায় ভিক্টরের মা-বাবা, স্পার্কি
পালিয়ে যায় আর ফ্রাঙ্কেনস্টাইন পরিবার তাকে খুঁজতে বের হয়। ঠিক
তখনই বব, তোশিয়াকি,
ন্যাসর এবং উইয়ার্ড গার্ল এডগারের সাথে ভিক্টরের
বাড়িতে গিয়ে জেনে নেয় ভিক্টরের ফর্মুলা। তোশিয়াকি-ন্যাসর নিজেদের পোষা
প্রাণীদের মৃতদেহ নিয়ে আসে, বব নিয়ে আসে ইঁদুর আর উইয়ার্ড গার্লের বিড়াল ধরে আনে বাদুড়। কিন্তু তাদের সবার পরীক্ষাই ব্যর্থ হয়। বরং
মৃত প্রাণীগুলো ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। সেদিন সন্ধ্যায় চলছিল ডাচ ডে‘র মেলা, সেখানেই
আক্রমণ করে প্রাণীগুলো। স্পার্কিকে প্রাণীদের কবরস্থানে খুঁজে পায় ভিক্টর। আর সেখানেই তাকে দেখে বব আর তোশিয়াকি সব কিছু জানায়। ডাচ ডে মেলায় গিয়ে মনস্টার বা দৈত্যদের ধ্বংস করে ভিক্টর। তবে উইয়ার্ড গার্লের বিড়াল যে বাদুড়-বিড়ালের মিশেলে
দৈত্যাকৃতি ধারণ করেছে, ভিক্টরের বান্ধবী এলসার বিড়ালকে নিয়ে যায়, এলসাও
তার পেছনে যায়। আটকে পড়ে এক বায়ুকলে। ভিক্টর বাঁচাতে যায় তাকে। এদিকে স্পার্কিকে দেখে সবাই ভূত ভেবে তাকে আক্রমণ করতে ছুটে
যায়। স্পার্কি দৌড়াতে দৌড়াতে সেই বায়ুকলে যায়। এলসার
আঙ্কেলের হাতে থাকা মশাল থেকে সেখানে আগুন লেগে যায়। আটকে
পড়ে ভিক্টর ও এলসা। এলসাকে বাঁচালেও ভিক্টর থেকে যায় ভেতরে। স্পার্কি
বাঁচায় ভিক্টরকে। তখনই সেই দৈত্যাকৃতির বাদুড়-বিড়াল আক্রমণ করে স্পার্কিকে, আগুনের
মধ্যে নিয়ে যায়। অবশেষে মৃত স্পার্কিকে উদ্ধার করে আনা হয়। তারপর গাড়ির ইঞ্জিনের সহায়তায় পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে স্পার্কিকে
জীবিত করার চেষ্টা করে ভিক্টর। একসময় স্পার্কি বেঁচে ওঠে। এভাবেই শেষ হয় ফ্রাঙ্কেনহুইনির
কাহিনী।
বারটন এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শ্রদ্ধা
জানিয়েছেন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন, মাম্মি, ড্রাকুলার মতো সাইফাই আর হরর চরিত্রগুলোকে। গল্প
বলার ধরণ আর চরিত্রগুলোর মিশ্রণ ছিলো অসাধারণ। তবে কোন কোন সময় খেই হারিয়ে ফেলেছে
ফ্রাঙ্কেনহুইনি। চলচ্চিত্রটি ব্ল্যাক অ্যান্ড
হোয়াইট হওয়ায় দেথতে একটু কষ্ট হতে পারে। হেরর ফিল্মের মুড আনার জন্যই
এটি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে কাহিনী আরেকটু ভালোভাবে
বলা যেত। একে যদি কমেডি হিসেবে বলা হয় তবে তা খুব বেশি ভালো হয়েছে
বলা যায় না। তবে নিজের ছেলেবেলায় ঘুরে আসতে চাইলে দেখে নিতে পারেন চলচ্চিত্রটি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন